ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকির মাঝেই চিন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী! লাদাখে লাল ফৌজের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে এই প্রথম
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন ভারতকে। ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর পরে তা আরও বৃদ্ধি করার হুমকি দিয়েছেন। উদ্ভূত এই কূটনৈতিক আবহে চিনে যাচ্ছেন মোদী।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে বার বার হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন ভারতকে। ইতিমধ্যে নয়াদিল্লির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখার জন্য এই শুল্কহার আরও বৃদ্ধি করার হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প। বস্তুত, রাশিয়ার থেকে জ্বালানি কেনা দেশগুলির মধ্যে ভারতের পাশাপাশি রয়েছে চিনও। উদ্ভূত কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে মোদীর চিন সফর আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
চিনের তিয়ানজিন শহরে আগামী ৩১ অগস্ট এবং ১ সেপ্টেম্বর এসসিও-র রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠক রয়েছে। এই আন্তর্জাতিক জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানও। এসসিও বৈঠকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ যোগ দিতে যাবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড এবং ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরবর্তী সময়ে এসসিও-র রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে মোদী কোনও বার্তা দেন কি না, সে দিকে নজর থাকবে।
এর আগে এসসিও-র প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীদের পৃথক সম্মেলন হয়ে গিয়েছে। প্রথমে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং পরে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, উভয়েই সেই সম্মেলনের জন্য চিন সফরে গিয়েছিলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গে নাম না করে পাকিস্তানকে নিশানা করে এসেছেন রাজনাথ। স্পষ্ট করে দিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত কোনও দু’মুখো আচরণ বরদাস্ত করবে না। সম্মেলনে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ মুহাম্মদের উপস্থিতিতেই নয়াদিল্লির এই অবস্থান স্পষ্ট করে এসেছেন রাজনাথ। এ বার রাষ্ট্রনেতাদের সম্মেলনে শাহবাজ উপস্থিত থাকলে, মোদীও কোনও কড়া বার্তা দেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যে।
২০১৯ সালে শেষ চিন সফরে গিয়েছিলেন মোদী। তার পর লাদাখে ভারত এবং চিনের সংঘর্ষের পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে। তবে গত বছরে রাশিয়ার কাজ়ানে আন্তর্জাতিক জোট ‘ব্রিক্স’-এর পার্শ্ববৈঠকে সাক্ষাৎ করেন মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার পর থেকে সীমান্ত সমস্যা কাটিয়ে দু’দেশে মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত হতে শুরু করে।
সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকির আবহে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও নিবিড় করার চেষ্টা করছে বেজিং। ভারত এবং চিনের শক্তির কথা বলতে গিয়ে ‘হাতি’ এবং ‘ড্রাগন’-এর উপমা ব্যবহার করেছে তারা। চিনের বক্তব্য, ‘‘ড্রাগন এবং হাতির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাগন আর হাতিকে একসঙ্গে নাচিয়ে দিতে হবে। একে অপরের বিরুদ্ধে কথা না-বলে পরস্পরকে সাহায্য করতে হবে। তাতেই দুই দেশের ফয়দা। যদি এশিয়ার বৃহত্তম দুই অর্থনীতি একজোট হয়, সমগ্র বিশ্বের পক্ষেই তা লাভজনক।’’ এই আবহে মোদীর চিন সফরে জিনপিংয়ের সঙ্গে আলাদা করে কোনও বৈঠক হয় কি না, তা নিয়ে কৌতূহল আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।