Live

বিয়ের পরে কী অনুভূতি dilip ghosh

 Dilip Ghosh Marriage: 'বয়স সংখ্যামাত্র, আমার আত্মবিশ্বাস ছিল উনি রাজি হবেন', দিলীপকে বিয়ে করে বলছেন রিঙ্কু

Dilip Ghosh and Rinku Majumdar Marriage: বিয়ের আগে জানিয়েছিলেন, 'টেনশন হচ্ছে না'। আর বিয়ের পরে কী অনুভূতি দিলীপের?


কলকাতা: বৈদিক রীতি মেনে বিয়ে। মন্ত্রোচ্চারণ। মালা বদল। সিঁথিতে সিঁদুর। শুক্র সন্ধ্যায় যে দিলীপ ঘোষকে গোটা পশ্চিমবঙ্গ দেখল, তাঁকে কার্যত চেনাই যায় না। দিলীপ ঘোষ ও যে এমন করে সহধর্মিনীকে সিঁদুর পরিয়ে তাঁর মাথায় ঘোমটা টেনে দিতে পারেন, এই ছবি কয়েকটা দিন আগেও যেন ছিল কল্পনার অতীত। কিন্তু শুক্রবার কার্যত অসাধ্য সাধনটাই করে ফেললেন রিঙ্কু মজুমদার। দিলীপ ঘোষ বাঁধা পড়লেন সাত পাকে। বিয়ের পরে, এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কি জানালেন নববিবাহিত দম্পতি?বিয়ের আগে জানিয়েছিলেন, 'টেনশন হচ্ছে না'। আর বিয়ের পরে কী অনুভূতি দিলীপের? 'প্রথমবার অভিজ্ঞতা হল, নিঃসন্দেহে। নতুন অভিজ্ঞতা। জীবনে তো আর বিয়ে করিনি, এই প্রথমবার করলাম। আমরা কোনও আড়ম্বর করিনি। সাধারণভাবে ঘরের মধ্য়ে হওয়ার ছিল, সেটা সবাই জেনেছেন। সেভাবেই হয়েছে। আলাদা করে কিছু না। একটা ফরম্যালিটি পুরো হল।' সিঁদুর পরিয়ে স্ত্রীর মাথায় কাপড় টেনে দিচ্ছেন দিলীপ ঘোষ, এই ছবি দেখেই তো শোরগোল। এই পরিবর্তন কি বিয়েরই অবদান? দিলীপ ঘোষ বলছেন, 'এতদিন তো অনেক কিছুই দায়িত্ব পালন করেছি, স্বামীর দায়িত্ব পালন করার সুযোগ প্রথমবার হল। এটাই অনুশীলন করছি। দেখা যাক কী হয়। এটা তো বিয়েরই একটা অঙ্গ। এটা আমাকেই করতে হবে, অন্য কেউ করতে পারবে না।'।
দিলীপ বিয়ে করছেন, এই কথা পরিবার জানার পরে, তাঁরা কি বলেছিলেন? 

বিজেপি নেতা বলছেন, 'পরিবার বলতে, মায়ের কাছে বলেছিলাম। মায়ের জন্যই তো সব। এই বাড়িতে আমরা ২০ জন থাকি, কিন্তু একজনই মহিলা, মা। তাঁর ৮৪ বছর বয়স। তাঁকে জল খাওয়াবারও লোক নেই। আমায় কাজে বাইরে যেতে হয়। কয়েকবার এইরকম ঘটনা ঘটেছে যে মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ইনিই (রিঙ্কু মজুমদার) আমায় বলেছিলেন, 'আমি আবার জীবনে সংসারী হতে চাই। সাথী চাই।' আমি বলেছিলাম, 'খুব ভাল, করে ফেলো'। তখন ইনি বলেছিলেন, 'না আপনাকেই বিয়ে করতে চাই, আপনি রাজি আছেন কি না..' তখন আমি বলেছিলাম, একটু সময় নিতে দাও। বিষয়টা আমি হজম করি আগে। তারপরে ১-২ মাস সময় লেগে গিয়েছে বুঝতে। তারপরে মা কেও বললাম যে আমি তো তোমায় ছেড়ে যেতে পারছি না, তাহলে কাজ করব কি করে? তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে না, তাহলে সমাধানটা কী? আর বিয়ে করা ছাড়া কোনও রাস্তা নেই। মা বলেছিলেন, 'করে ফেল না, অসুবিধা কিসের?' আমি RSS-এর প্রচারক ছিলাম। প্রচারকরা বিয়ে করে না। আমায় ১০ বছর আগে পার্টি সেই জীবন থেকে মুক্তি দিয়েছে। নেতা বানিয়ে দিয়েছে। MLA, MP করে দিয়েছে। মাও সেটাই আমায় বললেন। আমি বলেছিলাম, 'এই বয়সে বিয়ে করব? এই বয়সে কেউ বিয়ে করে না।' ইনি বলেছিলেন, 'আরও ২০ বছর সময় তো আছে।' আমার প্রয়োজন ছিল মায়ের জন্য, ওনারও প্রয়োজন ছিল কাউকে, সংসার জীবন করার জন্য নতুন করে। ঠাকুরের ইচ্ছা ওটাই ছিল বোধহয়। শেষ পর্যন্ত ওটাই হল।'সম্পর্কের কোনও বয়স হয় না। 

দিলীপ ঘোষ আজ কি সেটা নতুন করে উপলদ্ধি করলেন? সদ্য বিবাহিত বিজেপি নেতা বলছেন, 'দায়িত্ব পালন করতে হবে। সম্পর্ক মানে দুজন মানুষের মধ্যে যেমন বন্ধুত্ব হয়, প্রেম হয়, পরস্পর সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করে.. সেটাই হওয়া উচিত। পরস্পর যদি মনে করেন আমরা করব, তাহলে সেটা অসম্ভব কিছুই নয়।'বিয়ের পর কি নিজের পদবি বদলে ফেলবেন রিঙ্কু? সলজ্জ হেসে উত্তর, 'হ্যাঁ, রিঙ্কু মজুমদার ঘোষ। দিলীপ ঘোষকে যখন বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন রিঙ্কু, তখন কখনও ভেবেছিলেন যে তিনি রাজি হবেন? নববধূ বলছেন, 'হ্যাঁ.. আমার মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস ছিল। কেন জানি না, আমার মনে হয়েছিল আমার প্রস্তাব উনি গ্রহণ করবেন। মনের মধ্যে একটা ইতিবাচক ভাবমূর্তি ছিল। আর যেমন ভেবেছিলাম, তেমনই হল।' সময় বা বয়সকে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কি বাধা বলে মনে করেন রিঙ্কু? উত্তর এল, 'কখনোই না। বয়স একটা সংখ্যামাত্র।'  নতুন সংসারে পা রাখলেন রিঙ্কু। সংসারের পাশাপাশি সামলাতে হবে রাজনীতিও। কী পরিকল্পনা রয়েছে? নববধূ বলছেন, 'খুব ভালভাবে, মানসিকভাবে, ওতপ্রোতভাবে রাজনৈতিক জীবনকে আরও উন্নত করতে পারব। অনেক ওঠাপড়া থাকে, মনখারাপ থাকে, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদল হতে থাকে। তখন একজন অন্যজনকে সান্তনা দিতে পারব।'


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকে শুভেচ্ছা পাঠানো হয়েছে দিলীপ ঘোষ ও রিঙ্কু মজুমদারকে। তা নিয়ে রিঙ্কু বলছেন, 'খুব ভাল লেগেছে যে উনি আমাদের বিয়েটাকে মান্যতা দিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আমরা চাই, ২৬ অবধি উনি যেন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক বাতাবরণটাকে সঠিক রাখতে পারেন। যা হয়ে গিয়েছে হয়ে গিয়েছে। কখনও মানুষকে ছাড়তে শিখতে হয়। একজন যদি অপরজনকে জায়গা না ছেড়ে দিই, তাহলে পরিবর্তন, বিবর্তন, আবর্তনটা কী করে হবে? উনি অনেকদিন ক্ষমতায় রইলেন। এবার ওনারও বোঝা উচিত, ওনার ও এবার অপর কাউকে জায়গা ছেড়ে দেওয়া উচিত। এবার ওনার ও একটু মানসিকভাবে বিশ্রাম নেওয়া উচিত। ছেড়ে দিক না.. আর কত? অনেকটা বয়স তো ওনার ও হল।'


Previous Post Next Post