Live

মৃত অর্থনীতির দেশ’ বলেছিলেন ট্রাম্প, সেই ভারতের মূল্যায়ন বাড়িয়ে দিল আমেরিকারই রেটিং সংস্থা!

 শেষ বার ভারতের মূল্যায়ন বদলেছিল ২০০৭-এ। হয়েছিল ‘BBB-’। আমেরিকা শুল্ক চাপানোর পরে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এর জেরে অর্থনীতি ধাক্কা খেলে মূল্যায়ন আরও নীচে নামতে পারে।



আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতকে মৃত অর্থনীতির দেশ বলে কটাক্ষ করার কয়েক দিনের মধ্যে এ দেশের মূল্যায়ন (সভরিন ক্রেডিট রেটিং) বাড়িয়ে দিল আমেরিকারই সংস্থা এসঅ্যান্ডপি। ভারতের ভবিষ্যৎ আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল জানিয়ে তা তুলে আনল ‘BBB’-তে। এত দিন ছিল ‘BBB-’, যা ঋণ শোধের ক্ষমতা এবং লগ্নিযোগ্যতার শেষ ধাপ। ১৯ বছর পরে এই প্রথম ভারতের মূল্যায়নে উন্নতি কার্যত চমকে দিয়েছে সকলকে। দেশের বর্তমান আর্থিক অবস্থার প্রেক্ষিতে হঠাৎ এসঅ্যান্ডপি-র এমন পদক্ষেপে কিছুটা বিস্মিতও বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তবে মূল্যায়ন সংস্থার এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সরকার।

শেষ বার ভারতের মূল্যায়ন বদলেছিল ২০০৭-এ। হয়েছিল ‘BBB-’। আমেরিকা শুল্ক চাপানোর পরে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এর জেরে অর্থনীতি ধাক্কা খেলে মূল্যায়ন আরও নীচে নামতে পারে। সে ক্ষেত্রে ঋণ শোধে অপারগ এবং লগ্নির অযোগ্য দেশের সারিতে ঠাঁই হবে। যদিও বাস্তবে হল উল্টোটা। এসঅ্যান্ডপি-র দাবি, ‘BBB’ মানে ঋণ শোধের ক্ষমতা বেড়েছে। বেড়েছে লগ্নি পাওয়ার যোগ্যতা। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আগের থেকে কম সুদে ঋণ পাওয়া সহজ হবে। সংস্থাটির দাবি, ভারতীয় অর্থনীতির অগ্রগতি, মূল্যবৃদ্ধিকে বাগে আনা, আর্থিক ব্যবস্থাকে পোক্ত করতে কেন্দ্রের নীতি, পরিকাঠামো-সহ বিভিন্ন খাতে সরকারের খরচ উন্নতির পথ তৈরি করে দিচ্ছে। যা আর্থিক বৃদ্ধির গতি বাড়াবে ২ বছরের মধ্যে। তাই বাড়ানো হল মূল্যায়ন।

তবে আইসিএআই-এর পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনির্বাণ দত্তের বক্তব্য, মূল্যায়ন বৃদ্ধির মতো কিছু ঘটেনি। বরং দেশে চাহিদার অভাব, মন্থর উৎপাদন, বেকারত্ব, সুদ কমলেও ঋণে ভাটা, ঢিমে বেসরকারি লগ্নির মতো সমস্যাগুলি প্রকট। সরকারের খাতায়-কলমে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার তলানিতে নামলেও, বাস্তবে আনাজ-সহ খাদ্যপণ্যের দর আগুন।চরম রূপ নিয়েছে আর্থিক বৈষম্যও। পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিক বলেন, ‘‘ভারত বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধির অর্থনীতি হলেও, উন্নতি হচ্ছে শুধু উচ্চবিত্ত মানুষের। অথচ তার ভিত্তিতেই এসঅ্যান্ডপি ভারতের মূল্যায়ন বাড়িয়েছে। এটা টিকিয়ে রাখতে এমন নীতি নেওয়া জরুরি, যা দেশে চাহিদা এবং কর্মসংস্থান বাড়াবে।

বণিকসভা মার্চেন্ট চেম্বারের ব্যাঙ্কিং এবং আর্থিক বিষয়ক পরিষদের চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্র অবশ্য মনে করেন, এসঅ্যান্ডপির পদক্ষেপের পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে। মূল্যায়ন বাড়ানো হয়েছে আমেরিকার স্বার্থ রক্ষার জন্য।

Previous Post Next Post