রোহিঙ্গারা শরণার্থী না অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, তা আগে স্থির করতে হবে! পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চের
রোহিঙ্গা সংক্রান্ত একগুচ্ছ মামলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বৃহস্পতিবার ওই মামলাগুলিতে তিন ভাগে ভাগ করে দেয় শীর্ষ আদালত। একটি ভাগে থাকছে রোহিঙ্গা সংক্রান্ত মামলা। অপর ভাগে থাকছে রোহিঙ্গাদের সমস্যা সংক্রান্ত মামলা। এ ছাড়া একটি মামলাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে জানিয়েছে আদালত।
এই সংক্রান্ত মামলাগুলিকে বৃহস্পতিবার তিনটি ভাগে ভাগ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। একটি ভাগে থাকছে রোহিঙ্গা সংক্রান্ত মামলা। অপর ভাগে থাকছে রোহিঙ্গাদের সমস্যা সংক্রান্ত মামলা। এ ছাড়া একটি মামলাকে সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে জানিয়েছে আদালত। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চ জানিয়েছে, রোহিঙ্গা বিষয়ক এই তিন ধরনের মামলাকে পৃথক ভাবে শোনা হবে। আপাতত প্রত্যেক বুধবার করে এই মামলাগুলির শুনানি হবে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, বিচারপতি কান্তের পর্যবেক্ষণ, “প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সহজ, তারা (রোহিঙ্গারা) শরণার্থী না অবৈধ অনুপ্রবেশকারী?” মামলাগুলিতে কী কী বিষয় উঠে এসেছে, কোন কোন বিষয়গুলি দেখা হবে, তা-ও জানিয়েছে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। রোহিঙ্গারা কি শরণার্থী হিসাবে ঘোষিত হতে পারেন? যদি তেমন হয়, তবে তারা কী কী সুরক্ষা, সুযোগ-সুবিধা বা অধিকার পেতে পারেন? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে মামলায়। আদালত জানিয়েছে, এর পরে দ্বিতীয় যে বিষয়টি উঠে এসেছে, তা হল রোহিঙ্গারা যদি শরণার্থী না হয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হন, সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিতাড়নের ক্ষেত্রে কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির পদক্ষেপ সঠিক ছিল কি না।
সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, “যদি ধরে নেওয়া হয় রোহিঙ্গারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী, তা হলেও কি তাঁদের অনির্দিষ্টকালের জন্য আটক রাখা যেতে পারে? না কি আদালত থেকে উপযুক্ত শর্তসাপেক্ষে জামিন পাওয়ার অধিকার রয়েছে তাঁদের?” এই বিষয়টিও দেখা দরকার বলে মনে করছে আদালত। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, মামলাগুলিতে আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে। তা হল, যে রোহিঙ্গাদের আটক করা হয়নি এবং আশ্রয় শিবিরে বাস করছেন, তাঁরা পানীয় জল, নিকাশি এবং শিক্ষার মতো মৌলিক সুযোগসুবিধাগুলি পাচ্ছেন কি না। রোহিঙ্গারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হলেও আইন মোতাবেক কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলি তাঁদের বিতাড়ন করতে পারে কি না, সেই বিষয়টিও উঠে এসেছে মামলায়।
বস্তুত, এর আগে গত ১৬ মে রোহিঙ্গা সংক্রান্ত কিছু মামলায় মামলাকারীদের ধমক দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মামলাকারীদের দাবি ছিল, শিশু এবং মহিলা-সহ ৪৩ জন রোহিঙ্গাকে আন্দামান সাগর হয়ে মায়ানমারে বিতাড়ন করা হচ্ছে। ওই সময় মামলাকারীদের ধমকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, “আপনারা আজগুবি গল্প নিয়ে আসছেন।” এক মামলাকারী আদালতে যে তথ্য জমা দিয়েছিলেন, তার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও সেই সময় প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। তারও আগে গত ৮ মে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, যদি এ দেশে থাকা কোনও রোহিঙ্গা ভারতীয় আইন অনুসারে বিদেশি বলে প্রমাণিত হন, তবে তাঁদের বিতাড়িত করা যাবে।