Live

রাস্তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েও হয়নি লাভ। অসুস্থ বৃদ্ধাকে বাঁশের ডুলিতে চাপিয়ে ছুটলেন পরিবারের লোকজন। বিশদ পড়ুন। #Narayangarh #ABPAnanda

 Paschim Medinipur News: বাঁশের ডুলিতে অসুস্থ বৃদ্ধা, কাঁধে করে বইলেন দুই যুবক, নারায়ণগড়ে বেহাল রাস্তার করুণ চিত্র

Narayangarh News: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের গ্রামরাজ অঞ্চলে শানদেউলি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।


অমিত জানা, নারায়ণগড়: বেহাল রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার উপায় নেই। রোগিণীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে তাই আনা হল বাঁশ। সেই বাঁশের সঙ্গে বেঁধে নেওয়া হল রোগিণীকে। এর পর দুই দিক থেকে কাঁধে সেই বাঁশ তুলে নিলেন দু'জন। সেই অবস্থায় হাঁটা লাগালেন তাঁরা। পাশে হাঁটলেন আরও দুই মহিলা। বাঁশের ডুলিতে ঝোলানো ওই মহিলাকে দুই দিক থাকে সামলালেন তাঁরা। জেলা থেকে ফের এমনই হয়রানির ছবি উঠে এল। (Paschim Medinipur News)

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের গ্রামরাজ অঞ্চলে শানদেউলি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, মোরামের সঙ্কীর্ণ রাস্তায় এমনিতেই অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকার উপায় নেই। তার উপর রাস্তার অবস্থাও বেহাল। এঁটেল মাটির কাদা, জলে পা ফেলাই দুষ্কর। সেই অবস্থায় কাঁধের বাঁশ থেকে রোগিণীকে ঝুলিয়ে নিয়ে এক পা এক পা করে এগোচ্ছেন দুই যুবক। অন্য দুই মহিলাও তাঁদের সঙ্গে হাঁটছেন। রোগিণীকে দুই দিক থেকে ধরে রেখেছেন তাঁরা। (Narayangarh News)

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকার উপায় নেই। তাই বাঁশে ঝুলিয়েই অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত রোগিণীকে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সকলে। এই ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে যেতে বাঁশ কেন লাগবে, অবধারিত ভাবেই এই প্রশ্ন উঠে আসছে। যে ভাবে ঝুঁকি নিয়ে, পা টিপে টিপে ওই রোগিণীকে নিয়ে হাঁটছিলেন দুই যুবক, তাঁদের পা পিছলে গেলে কী পরিণতি হতো, তা ভেবেও শিউড়ে উঠছেন অনেকে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে বার বারা জেলাশাসক, বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়। বর্ষার সময় বিশেষ করে বাড়ি থেকে মূল রাস্তায় এসে উঠতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। স্কুল থেকে কলেজ থেকে ফেরার সময় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে সেখানে। এদিন যাঁকে বাঁশের ডুলিতে চাপিয়ে মূল রাস্তায় আনা হয়, তিনি হার্টের রোগী। ৫০০-৭০০ মিটার ওই অবস্থাতেই পেরোতে হয় তাঁকে। তবেই অ্যাম্বুল্যান্সে উঠতে পারেন।

সরকারি পরিষেবা আদৌ সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। কারণ এই প্রথম নয়। এর আগে, গত ২২ মে এই নারায়ণগড় থেকেই হৃদয় বিদারক দৃশ্য সামনে আসে। সেবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে কাদায় গাড়ি আটকে যায় এক রোগিণীর। এক আশাকর্মীর তৎপরতায় রাস্তাতেই, গাড়ির মধ্যে সন্তান প্রসব করেন তিনি। সেই ঘটনা সামনে আসার পর রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে সরব হয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু কিছুই যে পাল্টায়নি, তা আবারও প্রমাণিত হয়ে গেল।

স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, "বারে বারে আমরা প্রধানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি। লিখিত অভিযোগও জানাই, যাতে আমরা বেরোতে পারি। বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে। কিন্তু সুরাহা হচ্ছে না। আমরা তফসিলি জাতির লোক, একটিই পাড়া। একজন অসুস্থ হলে খাটে করে বয়ে আনতে হয়। বাচ্চারা সাইকেলে চেপে যাবে যে, তারও উপায় নেই। আমরা অসহায় বোধ করছি। কোন রাজ্যে বাস করছি, যেখানে রোগীকে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে।"

যদিও এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী বলেন, "রাস্তাটার কথা শুনলাম। বিভিন্ন জায়গাতেই রাস্তা খারাপ হয়েছে। হতে পারে। আমরা শুনেছি। জানানো হয়েছে বিষয়টি। দেখছি কী করা যায়। বার বার বলা হচ্ছে জেলাশাসককে বলা হয়েছে, উনি কিন্তু কিছু বলেননি আমাদের। এমন একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। দেখছি কী করা যায়।"

এই ঘটনায় সরব হয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, দিনের পর দিন এভাবেই চলছে। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি।  যদিও নারায়ণগড়ের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জানিয়েছেন, শীঘ্রই রাস্তার অবস্থা খতিয়ে দেখে ব্য়বস্থা নেওয়া হবে।  কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, পাড়ায় সবমিলিয়ে ২৫টি পরিবারের বাস। কিন্তু এমনি দিনেও সেখানে রাস্তায় গাড়ি ঢুকতে পারে না। 

Previous Post Next Post