All Party Meeting on Pahalgam: সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপে সরকারকে পূর্ণ সমর্থন, ‘কিন্তু প্রধানমন্ত্রী অনুপস্থিত কেন’? সর্বদল বৈঠকে প্রশ্ন বিরোধীদের
Kashmir Terror Attack: সর্বদল বৈঠকে নিরাপত্তায় খামতির দিকটি তুলে ধরা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ফুঁসছে গোটা দেশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই যোগ্য জবাবের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সর্বদল বৈঠকে কড়া পদক্ষেপে পূর্ণ সমর্থন জানাল বিরোধী শিবিরও। একই সঙ্গে আগামী কাল কাশ্মীর যাচ্ছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী। সর্বদল বৈঠকে নিরাপত্তায় খামতির দিকটি তুলে ধরা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। (All Party Meeting on Pahalgam)
মঙ্গলবার কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন পর্যটককে খুন করেছে জঙ্গিরা। সেই নিয়ে একদিকে যেমন শোকের আবহ, সেই সঙ্গে ক্ষোভও আছড়ে পড়ছে। আর সেই পরিস্থিতিতেই এদিন সর্বদল বৈঠকের আয়োজন হয় দিল্লিতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে ছিলেন না। National Panchayati Raj Day Programme-এ যোগ দিতে বিহারে রয়েছেন তিনি। তাই বৈঠকে নেতৃত্ব দেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। জঙ্গি হামলায় ইতিমধ্যেই পাকিস্তান সংযোগ ধরা পড়েছে। আর সেই নিয়েই কড়া পদক্ষেপে করায় সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধীরা। (Kashmir Terror Attack)
এদিন বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন রাহুল। তিনি বলেন, "পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করেছেন সকলে। কড়া পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে সরকারকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধীরা।" কংগ্রেস জানিয়েছে, শুক্রবারই কাশ্মীরের অনন্তনাগে পৌঁছবেন রাহুল। সেখানে আহতদের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেবেন।
কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খড়গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, "এত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি কাম্য ছিল। কারণ তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিন স্তরীয় নিরাপত্তায় এত বড় বিপর্যয় ঘটল কী করে? এটা নিরাপত্তার বিপর্যয়, সরকার সন্ত্রাসের মোকাবিলায় সঠিক পদক্ষেপ করেনি। দেশের স্বার্থে সরকারকে সমর্থন করব আমরা। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। দেশ ঐক্যবদ্ধ, এই বার্তাই দিতে চাই।"
সর্বদল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "নিরাপত্তা খামতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশের স্বার্থে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তাতে সমর্থন থাকবে বলে জানিয়েছি। সব দলের প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করা উচিত প্রধানমন্ত্রীর।"
আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংহ বলেন, "গোটা দেশ ক্ষুব্ধ, অসন্তুষ্ট। দেশের নাগরিকরা চান, জঙ্গিদের জঙ্গিদের ভাষাতেই জবাব দেওয়া হোক। যেভাবে ওরা আমাদের নিরীহ মানুষগুলিকে খুন করেছেন, ওই একই ভাষাতে জঙ্গিদের সমূলে উৎপাটিত করতে হবে। বিরোধীরা সকলেই একমত হয়েছেন যে, জঙ্গিদের শিবির গুঁড়িয়ে দিতে হবে, যেখান থেকে গোটা বিষয়টি পরিচালিত হচ্ছে, সেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিন।"
কিন্তু এত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়েও প্রশঅন তুলছেন বিরোধীরা। সঞ্জয় বলেন, "এত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল বিষয়ের উপর বৈঠক, দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে, আশা করেছিলাম প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। কিন্তু বিহারের কর্মসূচি ওঁর হয়ত বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। অনেকেই এই প্রশ্ন তোলেন।"
বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য় উঠে এসেছে বলে জানান সঞ্জয়। তিনি জানান, পহেলগাঁওয়ের যেখানে হামলা ঘটেছে, সেখানে অমরনাথ যাত্রীরাই যান। কিন্তু নিরাপত্তাবাহিনীকে না জানিয়েই ২০ এপ্রিল ওই এলাকা খুলে দেওয়া হয়। এর পরই ২২ এপ্রিল হামলা হয়। সঞ্জয় বলেন, "পুলিশ, সেনা, সিআরপিএফ কেউ জানল না, গোয়েন্দারা জানলেন না, হাজার হাজার লোককে যেতে দেওয়া হল। জঙ্গিরা এল, মেরে চলে গেল। নিরাপত্তায় বড় গাফিলতি সামনে এসেছে। এর দায় নিতে হবে। আমরা জবাব চেয়েছিলাম, কিন্তু বরাবরের মতো গোল গোল উত্তর দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যেভাবে ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বৈঠকে।"
AIMIM সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, "যে দেশ সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেয়, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারে সরকার। আন্তর্জাতিক আইন সেই অনুমতি দেয়। অস্ত্রশস্ত্র বিক্রির উপর চাপানো যেতে পারে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু বৈসরণে নিরাপত্তা বাহিনী ছিল না কেন? কুইক রেসপন্স টিম কেন এক ঘণ্টা সময় নিল পৌঁছতে? ধর্ম জিজ্ঞেস করে করে মারা হয়েছে। সেই নিয়ে কাশ্মীরি নাগরিক, কাশ্মীরি ছাত্রদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। এমন চললে পাকিস্তান, লস্কর-ই-তৈবা হাসবে। বাকিটা সরকারের উপর। সরকার যা সিদ্ধান্ত নেবে, তাতে সমর্থন রয়েছে আমাদের। কিন্তু সিআরপিএফ কেন ছিল না? জানুয়ারি মাসে ওখান থেকে সিআরপিএফ-এর দুই ইউনিটকে সরিয়ে নেওয়া হয়।"